মোছা.ফায়জুন্নাহার শান্তা
এল.এল.বি অনার্স, ১ম বর্ষ
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়।
“এক সাগর রক্তের বিনিময়ে
বাংলার স্বাধীনতা আনলে যারা,
আমরা তোমাদের ভুলব না।”
স্বাধীনতা—শুধু একটি শব্দ নয়, এটি একটি ইতিহাস, এক অমর চেতনার নাম। ১৯৭১ সালের সেই রক্তঝরা দিনগুলো, সাহসী মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগ, বীর নারীদের নিরব সংগ্রাম—এসবই আমাদের স্বাধীনতার বেদীমূলে গাঁথা একেকটি অগ্নিশিখা।
আজকের তরুণ প্রজন্মের জন্য স্বাধীনতা মানে শুধু একটি বিজয়ের গল্প নয়, এটি একটি দায়বদ্ধতা, একটি স্বপ্নের বাস্তবায়ন। শুধু ভাষায় নয়, মননে ও কর্মে যদি আমরা স্বাধীন না হই, তবে সেই বিজয় পূর্ণতা পায় না। সামাজিক অন্যায়, বৈষম্য, দুর্নীতি, অধিকার হরণের বিরুদ্ধে আজও দরকার আরেকটি বিপ্লব—চেতনার বিপ্লব, মুক্ত চিন্তার বিপ্লব, ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ানোর বিপ্লব।আজ, পঞ্চান্ন বছর পেরিয়ে, আমরা কি সত্যিই সেই চেতনাকে হৃদয়ে ধারণ করেছি? স্বাধীনতা মানে শুধু ভৌগোলিক মুক্তি নয়, এটি মানসিক মুক্তির নাম, এটি বৈষম্যহীন সমাজ গড়ার অঙ্গীকার।
তবুও দেখি, চারপাশে এখনো অন্যায়, নিপীড়ন, দুর্নীতি।তবে কি স্বাধীনতার চেতনা ফিকে হয়ে যাচ্ছে?না! আমরা যে তারুণ্য, যে আগুন, যে বিদ্রোহ, আমাদের শপথ—এই চেতনাকে কখনো নিভতে দেব না!
“তারুণ্যের শপথ নিবে নবীন
চেতনার আগুন জ্বালো প্রাণে,
তিমির রাতের হবে অবসান”
আজকের তরুণেরা সেই নতুন বিপ্লবের সৈনিক, যারা হাতে তুলে নিয়েছে কলম, চিন্তা, উদ্ভাবন ও সংগ্রামের অগ্নিশিখা। স্বাধীনতা উদযাপনই যথেষ্ট নয়, বরং তার আদর্শ বাস্তবায়ন করাই আমাদের আসল দায়িত্ব। আমাদের শত্রু শুধু বাইরের কোনো শক্তি নয়, আমাদের শত্রু হলো দারিদ্র্য, কুসংস্কার, দুর্নীতি, অসততা ও বৈষম্য। এদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোই হবে আমাদের নতুন যুদ্ধ।আমাদের কাজ, শুধু স্বাধীনতা উদযাপন করা নয়, বরং এই চেতনাকে কর্মে রূপ দেওয়া।
“যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে, তবে একলা চলো রে!”রবীন্দ্রের এই আহ্বান আজও তারুণ্যের মর্মমূলে জাগ্রত, প্রেরণা দেয় নতুন পথের দিশা।এই স্বাধীনতার ডাক আমাদের—আমরা হব সাহসী, আমরা হব দুর্নীতির বিরুদ্ধে বজ্রকণ্ঠ, আমরা হব সমৃদ্ধ বাংলাদেশের নির্মাতা। স্বাধীনতার স্বপ্ন আমাদের হাতেই পূর্ণতা পাক!