হালুয়াঘাট (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি:
ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের সদর থেকে ৮ কিলোমিটার দুরের গ্রাম বোয়ালমারা। উজানের পাহাড়ী বোরারঘাট নদীর বেরিবাঁধ ভাংগলে বোয়ালমারা খালের দুই পাড়ের মানুষের অন্তত পাঁচটি গ্রামের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যেত এই খাল পারাপারের জন্য কোন সেতু না থাকায়। শুধু তাই নয় স্থানীয়দের কৃষি পন্য থেকে শুরু করে অসুস্থ রোগীদের হাসপাতালে নেওয়া দুস্কর ছিল বর্ষা এলেই। আর ভোগান্তি যেন শেষ থাকতো না। স্থানীয়দের এই খালে সেতু নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের থাকলেও দুর্ভোগ লাঘবে এগিয়ে আসেনি কেউ।
সোমবার বিকেলে মানুষের দুভোর্গ লাঘবে বোয়ালমারা খালের উপর নির্মাণাধীন সাঁকু উদ্বোধন করেন ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপি নেতা সালমান ওমর রুবেল। এতে অবশেষে আজ ১১০ মিটার কাঠের সাঁকুতে দুঃখ ঘুচলো ওই গ্রামসহ অন্তত পাঁচটি গ্রামের ১৫ হাজার মানুষের। সাধারণ মানুষ অনেক খুশি।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার গাজজীর ভিটা ইউনিয়নের বোয়ালমারা গ্রাম। এই গ্রামের দুঃখ এই খালের দক্ষিণে মাহজনিকান্দা,গোপিনগর,কালিনিকান্দা এবং উত্তরে সমনিয়াপাড়া এবং বোয়ালমারা গ্রাম। এসব গ্রামের অন্তত ১৫ হাজার মানুষের বসবাস। এই পাঁচটি গ্রামে দুইটি প্রাথমিক বিদ্যালয়,মসজিদ মন্দির ও গির্জাসহ রয়েছে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। গ্রামগুলি আধিবাসি অধ্যুষিত এলাকা হলেও বোয়ালমারা খাল পারাপারের জন্য ছিলনা কোন সেঁতু। এতে বর্ষা এলেই দুর্ভোগে পোহাতে হতো দুই পারের পাঁচ গ্রামের বাসিন্দাদের। বর্ষা এলেই দুর্ভোগ যেন থাকতো নিত্য সঙ্গী। বোয়ালমারা খাল পাড় এলাকা হতে হালুয়াঘাট সদরে যেতে পাড়ি দিতে হয় অন্তত ৮ কিলোমিটার সড়ক। মাহজনিকান্দা,গোপিনগর,কালিনিকান্দা এলাকার শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা হালুয়াঘাট সদরে বর্ষা এলে এসব এলাকার শিক্ষার্থীদের পোহাতে হয় ভোগান্তি।
দীর্ঘদিনের এই ভোগান্তি লাঘবে এগিয়ে এসেছেন ময়মনসিংহের উত্তর জেলা সদস্য সালমান ওমর রুবেল। তার ব্যক্তিগত উদ্যোগে তৈরি করেছেন ১১০ মিটার দৈর্ঘের এই সেতু।
স্থানীয় ভাস্কর চিসিম বলেন, আমাদের এই গ্রামের মানুষের দুর্ভোগের শেষ থাকতো না। একটা সময় বিভিন্ন মহলে দৌড়ে এই খালে কোন সেতুর বরাদ্ধ আসে নাই। অবশেষে বিএনপি নেতা সালমান ওমর রুবেল ব্যাক্তিগত উদ্যোগে এই সেতুটি হওয়ায় এই এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের দুভোর্গ লাগব হলে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক শিক্ষক বলেন, বিগত কয়েকবছর ধরে পাহাড়ী নদীর বেরিভাদ ভেংগে যায় আর এর ফলে মাহজনিকান্দাসহ অন্তত পাঁচটি এলাকার সাথে বন্ধ হয়ে যায় যোগাযোগ । এতে এই এলাকার মানুষ অর্থনিতিকভাবে যেমন ক্ষতি হতো তেমনি সাধারণ মানুষেরা কৃষি পন্য সহ বাজারে নেওয়া ও উৎপাদনও কমে যেত। এই এলাকার শিক্ষার্থীরা কষ্ট করে বিদ্যালয়ে যেত। এখন এই খালে সেতু হওয়ায় সবার অনেক উপকার হলো।
নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী আসিফ জানান, আমারা আগে বিদ্যালয়ে যেতে হলে খালের ওই পারে গিয়ে ড্রেস চেইন্জ করে যেতাম। এখন আর এই ভোগান্তি থাকলো না। সহজে যেতে পারবো।
জানতে চাইলে সালামান ওমর রুবেল বলেন, আমি জানতে পারি বোয়ালমারা খালে একটি ব্রীজ না থাকায় ওই এলাকাসহ প্বার্শবর্তী পাঁচটি গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ শেষ ছিল না। পরে আমার ব্যাক্তিগত উদ্যোগে ওই খালের উপর ১১০ মিটার একটি সাঁকু তৈরি উদ্যোগ নেই। নির্মাণ শেষে আজ উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে যে এই এলাকার মানুষদের মুখে হাসি ফুটাতে পেরেছি এটাই আমার বড় পাওয়া।