স্টাফ রিপোর্টার:
ময়মনসিংহ সদর উপজেলার লেতু মন্ডল উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। সভাপতি করা হয়েছে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ময়মনসিংহ কে। এছাড়াও কমিটিতে অভিভাবক সদস্য হিসেবে স্থানীয় বিএনপি নেতা আব্দুল কাইয়ুম, শিক্ষক প্রতিনিধি সিনিয়র শিক্ষক আনিসুর রহমানকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। জানা যায়, ইতিমধ্যে কমিটি কার্যক্রম শুরু করলেও মহানগর যুবদল নেতা মাহমুদুল হাসান রাসেল এর আপন বড় ভাই আব্দুল হান্নান ও স্থানীয় বিএনপি নেতা আব্দুর রাজ্জাক সভাপতি হতে না পারায় প্রধান শিক্ষক আমেনা বেগম চম্পার বিরুদ্ধে গোপনে কমিটি করার অভিযোগে রাসেলের নেতৃত্বে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার অনুষ্ঠিত মানববন্ধনের ব্যানারে প্রধান শিক্ষকের দুর্নীতি, গোপনে কমিটি গঠনের অভিযোগে প্রধান শিক্ষকের অপসারন দাবি থাকলেও, বাস্তবে তা ছিল ব্যক্তিগত আক্রোশ ও যুবদল নেতার ভাইকে সভাপতি করতে না পারার প্রতিশোধ!
সরেজমিনে জানা যায়, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিগণের সাথে আলোচনা ও তাদের প্রদত্ত নামের সুপারিশ স্কুলের এডহক কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সদর এর নিকট বিগত ১৩/৩/২৫ তারিখে জমা প্রদান করেন। পরবর্তীতে সরকারি বিধি মোতাবেক যাচাই বাছাই শেষে এডিসি (সার্বিক) কে বিদ্যালয়ের সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করে ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ড থেকে আদেশ জারি করা হয়।
বিএনপি নেতারা সভাপতি হতে না পারাই প্রধান শিক্ষককে দোষারুপ এবং নাজেহাল ও সামাজিক ভাবে হয়রানীর উদ্দেশ্যে যুবদল নেতা রাসেল এর নেতৃত্বে কয়েকজন গত রবিবার সাহেবকাচারী বাজারে মানববন্ধন করেন। এছাড়াও অভিভাবক সদস্য আব্দুল কাইয়ুমও যুবদল নেতা রাসেলের আপন ভাই বটে।

এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক জানান, সরকারি বিধি মোতাবেক স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও বি এন পি নেতাদের প্রদত্ত তালিকা আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসার সদর স্যারের কাছে জমা দিয়েছি। উনারা যাচাই বাছাই করে কমিটি প্রেরণ করেছেন ও শিক্ষাবোর্ড থেকে যথাযথ ভাবে অনুমোদন দিয়েছে। বিষয়গুলো মানববন্ধন আয়োজনকারী ব্যক্তিগণও জানেন এবং তারাও বিভিন্ন সময়ে ইউওন ও স্যারের সাথে দেখা করেছেন। তারপরেও ব্যক্তিগত আক্রোশে মিথ্যা অভিযোগে মানববন্ধন করেছে।
মানববন্ধন শেষে যুবদল নেতা রাসেল ও তার লোকজন বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে শিক্ষকদের অযাযিত হুমকি ও তাদের সভাপতি না বানালে বিদ্যালয়ের ক্ষতি করবে মর্মে হুমকি দিয়েছে, যার অডিও ও ভিডিও এ সাংবাদিকের কাছে স্থানীয় লোকজন পাঠিয়েছেন।
স্থানীয় বিভিন্ন সচেতন নাগরীকদের কাছ থেকে জানা যায়, এর পূর্বেও বিদ্যালয়ের অনিয়মের বিরুদ্ধে যুবদল নেতা রাসেলের নেতৃত্বে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের নিকট অভিযোগ দিয়েছিলেন, যা তদন্ত হয়েছে। সত্যতা না থাকাই অভিযোগটি নথিভুক্ত রাখা হয়েছে। তারপরও বারবার এই চক্রটি বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ ও হয়রানী করছে যার পিছনে মূলত বিদ্যালয়ের জমি দখল, দোকান ভাড়া আত্মসাত ও ব্যক্তিগত শত্রুতার বশে যুবদল নেতা রাসেল এর হাত মর্মে বিভিন্ন লোকের সাথে কথা বলে জানা যায়। এ বিষয়ে সচেতন নাগরীকদের সহযোগিতা চেয়ে প্রধান শিক্ষকও তার ফেসবুক প্রোফাইলে নিজের বক্তব্য উপস্থাপন করেন যা পড়ে এলাকায় মানুষ প্রকৃত ঘটনা জানতে পেরেছেন।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আমিনুল ইসলাম জানান, প্রায়দিনই রাসেল তার লোকজনসহ স্কুলে শিক্ষকদের নানা রকমের হুমকি দিয়েছে তাদের চাহিদামতো কমিটি করার জন্য। বর্তমানে প্রশাসন সুন্দর কমিটি করে দিয়েছেন সেটি তারা মানতে পারছেন না। সহকারী প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, সকল ধরনের নিয়োগ যথাযথ নিয়ম মেনেই হয়েছে, যারা প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ চাইছে তাদের অন্য কোন উদ্দেশ্য রয়েছে।
উল্লেখ্য যে, সরকার পতনের পূর্বে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা তোফাজ্জল হোসেন তোতা বিদ্যালয়ের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন, পরে সরকার কমিটি বাতিল ঘোষণা করেছিল।